ছোটবেলায় বা বড় বেলায় স্কুল-কলেজে যখন প্রবন্ধ, জার্নাল বা অনুচ্ছেদ লিখতে দিতে, তখন হয়তো নিজ থেকে না লিখে মুখস্তবিদ্যাকেই সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতেন। সেই থেকে সম্ভবত আপনার লেখার হাতই সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারেনি।
তবে আপনি কি জানেন, ক্যারিয়ারের জন্যে Writing Skills কতটা গুরুত্বপূর্ণ? এই Writing Skills দিয়েই কিন্তু আপনি আপনার পুরো ক্যারিয়ারটিকে ভালোভাবে সাজিয়ে নিতে পারবেন। চলুন আজ তবে বিস্তারিত মোডে Writing Skills For Career নিয়ে আলোচনা করা যাক।
কিভাবে এই স্কিলকে কাজে লাগিয়ে ক্যারিয়ারে ফোকাস করা যায় এবং সিভি বা রেজুমেতে এই স্কিল যোগ করে কিভাবে পছন্দের পদটিকে নিজের করে নেওয়া যায় সে-সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
Writing Professions For Career
Writing Skills For Career থেকে আপনি চাইলে নিজেকে Writing Professions For Career মোডে সুইচ করতে পারেন।
কন্টেন্ট রাইটিং বা নিউজ রাইটিংয়ের মতো দারুণ সব সুযোগ রয়েছে এই সেক্টরে। এই ধরণের লেখা শুরু করার আগে আপনাকে নির্দিষ্ট ধরণের গবেষণা চালিয়ে নিতে হবে। সেই সাথে রিকনেসান্স রিডিং করতে হবে এবং একই সাথে নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর উপর অধ্যয়ন করার সময় নোট তৈরি করতে হবে।
এই প্রফেশনে অনেক সময় বাড়তি তথ্য ব্যবহার করে লেখাকে সংক্ষিপ্ত রাখতে হয়। এক্ষেত্রে বাড়তি তথ্য দ্বারা লেখাকে সংক্ষিপ্ত রাখতে আপনাকে বিভিন্ন উৎসের সাহায্য নিতে হবে। বিভিন্ন রেফারেন্স ঘাটাঘাটি করে বিতর্কের দিকে না যায় এমন তথ্য ব্যবহার করতে হবে।
Types Of Writing Professions
Writing Skills For Career সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান তাদের উচিত প্রাথমিক তথ্য হিসেবে এই জগতের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নেওয়া। নিজের এই রাইটিং স্কিলকে আকর্ষণীয় এবং বৈচিত্র্যময় উপায়ে উপস্থাপন করতে নিচের প্রফেশনগুলি বেছে নিতে পারেন:
স্ক্রিপ্ট রাইটিং বা চিত্রনাট্য
চিত্রনাট্য বা স্ক্রিপ্ট রাইটিং হলো ভিন্নধর্মী উপায়ে মানসম্মত গল্প সাজানো। যা তৈরি হবে হবে গবেষণা, বর্ণনামূলক কাঠামো, চিত্রনাট্য এবং গণমাধ্যমের জন্য তৈরিকৃত সংলাপের সাহয্যে।
চিত্রনাট্য লেখার বিভিন্ন উপায়ের মাঝে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় একটি সৃজনশীল উপায় হলো ফিচার ফিল্ম এবং টেলিভিশন প্রযোজনা। সুতরাং যাদের স্ক্রিপ্ট রাইটিং করার মতো দক্ষতা আছে তারা পরবর্তীতে ফিচার ফিল্ম এবং টেলিভিশন প্রযোজনার সাথে জড়িত যেকোনো পদে কাজ যোগ দিতে পারেন।
ড্রামাটিক রাইটিং
গদ্য বা পদ্যকে সুন্দররূপে লিখিত রূপ দেওয়ার নামই হলো এই ড্রামাটিক রাইটিং। এই ধরণের লেখা মূলত বেশ ছদ্মবেশী এবং সংলাপবহুল হয়ে থাকে। এই ধরণের রাইটিংয়ের মূল উদ্দেশ্য থাকে পরবর্তীতে তা অভিনেতাদের দ্বারা উপস্থাপন করা।
কন্টেন্ট রাইটিং
যেকোনো বিজ্ঞাপন, বিপণন, এবং প্রচারমূলক উপকরণের রাইটিং কপি, ওয়েবসাইটের আর্টিকেল, ভিডিও এবং পডকাস্টের স্ক্রিপ্ট, সেইসাথে নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মের জন্য যেকোনো প্ল্যান রাইটিং বা নিউজ রাইটিং হলো এই ধরণের রাইটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত কাজ।
রেজুমে রাইটিং
বর্তমানে চাকরির বাজার বেশ কড়া হয়ে গিয়েছে। যাদের পোক্ত সিভি বা রেজুমে নেই তারা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন৷
বর্তমানে চাকরিপ্রার্থীর যোগাযোগের তথ্য, কাজের অভিজ্ঞতা, শিক্ষা, প্রজেক্ট, কৃতিত্ব এবং প্রাসঙ্গিক দক্ষতার সংক্ষিপ্তকরণের এই প্ল্যাটফর্মটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছি। আশা করি কাজ জানা থাকলে দ্রুত ভালো ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন।
বায়োগ্রাফি রাইটিং
একটি নির্দিষ্ট ধরণের গবেষণার উপর ভিত্তি করে এই ধরণের রাইটিং করতে হয়। যেখানে থাকে ব্যক্তিগত ইতিহাসের সঠিক কপি। সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট ব্যাক্তির সামাজিক, রাজনৈতিক এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের তথ্য ফুটিয়ে তুলতে হয় এই ধরণের রাইটিং কপিতে।
Types Of Professions with Writing Skills
যখন কোনো লেখাতে গবেষণা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবন, প্রুফরিডিংসহ শব্দভান্ডার এবং অন্যান্য দিক সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় তখন তাকে প্রফেশনাল রাইটিং বলা হয়। প্রফেশনাল রাইটিং মূলত ৩ ধরণের। এগুলি হলো:
- একাডেমিক রাইটিং
- টেকনিক্যাল রাইটিং
- বিজনেস রাইটিং
একাডেমিক রাইটিং: লেখার মাধ্যমে একাডেমিক প্রেক্ষাপট তোলে ধরার নিয়মকেই সাধারণত একাডেমিক রাইটিং বলা হয়ে থাকে। চিন্তাভাবনা, কর্মক্ষমতা, সৃজনশীলতা ইত্যাদি এই ধরণের রাইটিং কপিতে খুব সুন্দররূপে সাজানো থাকে।
একাডেমিক রাইটিং বাংলাও হতে পারে আবার ইংরেজিও হতে পারে। তবে বর্তমানে প্রফেশনাল একাডেমিক রাইটিং এর ভাষা হিসাবে ইংরেজি ভাষাকেভ ধরা হয়ে থাকে। একাডেমিক জার্নাল, প্রবন্ধ, থিসিস, বুক রিভিউ ইত্যাদি হলো একাডেমিক রাইটিংয়ের সবচেয়ে বড় উদাহরণ।
টেকনিক্যাল রাইটিং: Writing Skills For Career হিসাবে এবারে আমরা জানবো টেকনিক্যাল রাইটিং সম্পর্কে। এই ধরণের রাইটিং কপি সাধারণত সফ্টওয়্যার ম্যানুয়াল এবং নির্দেশমূলক রাইটিং কপি হয়ে থাকে।
প্রযুক্তিগত প্রতিবেদন, কম্পিউটার ম্যানুয়াল, ব্রোশিওর, প্রস্তাবনা, প্রযুক্তি সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য, কোর্স ডিটেইলস ইত্যাদি রাইটিং কপি হলো টেকনিক্যালের রাইটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। যাদের টেকনোলজির প্রতি বাড়তি আগ্রহ কাজ করে তারা এই টেকনিক্যাল রাইটিংয়ের সাহায্যে রাইটিং ক্যারিয়ারে গড়ে তুলতে পারেন।
বিজনেস রাইটিং: টেকনিক্যাল রাইটিং কপির চাইতে বিজনেস রাইটিং কপিতে যেকোনো বিষয় বেশ খোলাসাভাবেই আলোচনা করা হয়ে থাকে। এই ধরণের লেখায় যেকোনো প্রজেক্ট বা প্রোডাক্ট অথবা কন্সেপ্ট এর সমস্ত ধারণা হাইলাইট করার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে উক্ত বিষয়টি গ্রাহকদের যথেষ্ট উপকৃত করবে।
মোটাকথা মার্কেটিং করাই হলো বিজনেস রাইটিং এর উদ্দেশ্য। বিজনেস ইমেইল, ব্র্যান্ড মেনিফেস্টো, মার্কেটিং কপি, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট কপি এই বিজনেস রাইটিংয়ের আন্ডারেই বিবেচিত হয়ে থাকে।
List Of Careers In Creative Writing
চলছে Writing Skills For Career সম্পর্কিত আলোচনা এবং আলোচনার এই অংশে আমরা একটি লিষ্ট শেয়ার করবো। এসব জবের সাথে রাইটিংয়ের উপর দক্ষ ব্যাক্তিরা সহজেই যুক্ত হতে পারবে। চলুন শুরু করা যাক।
শুরুতেই বলে রাখি বর্তমানে অনলাইনে বেশকিছু নির্দিষ্ট অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট রয়েছে। যা বিভিন্ন ধরণের লেখা কভার করে এই রাইটার হায়ার করে থাকে এবং তাদের মাধ্যমে রাইটিং কপি লিখিয়ে নেওয়ার বিনিময়ে সেলারি প্রদান করে। আপনি চাইলে সেসব ওয়েবসাইটে যুক্ত হতে পারেন।
এছাড়াও একজন প্রফেশনাল কন্টেন্ট রাইটার চাইলেই যেকোনো মানসম্মত বিজ্ঞাপন সংস্থা, মিডিয়া হাউস, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি ইত্যাদিতে চাকুরি নিতে পারেন। যারা রাইটিং স্কিল ডেভলপমেন্ট করে এই সেক্টরে আসতে চান তারা ভবিষ্যতে যেসব পদে কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন সে-সব পদগুলি হলো:
- রাইটার
- সম্পাদক
- স্ক্রিপ্ট রাইটার
- রিপোর্টার
- টেকনিক্যাল রাইটার
- কন্টেন্ট রাইটার
- বিজ্ঞাপন ম্যানেজার
- ওয়েব ডেভেলপার
- ব্লগার
- বায়োগ্রাফি রাইটার
- রেজুমে এবং সিভি রাইটার (কিভাবে রেজুমে এবং সিভি লিখবেন তা জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন)
- কলামিস্ট
- সাহিত্যিক
- কমিক্স রাইটার
- গ্রান্ট রাইটার
Creative Writer Salary Range
Writing Skills For Career সম্পর্কে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তো জানা হলো। এবারে এই সেক্টরের সেলারি সম্পর্কে একটি আইডিয়া নিয়ে রাখা উচিত। এতে করে ক্যারিয়ার প্ল্যান করাটা বেশ সহজ হয়ে যাবে।
একজন ক্রিয়েটিভ রাইটার মাসে ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০/৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারে। যারা নিজের ব্লগ সাইটে লেখে বা নিজেই বিজনেস করে তারা আরো বাড়তি অর্থ জেনারেট করতে পারে। প্রতি ঘন্টায় একজন রাইটার কমপক্ষে ১৫০/- এবং সর্বোচ্চ ১০০০/- আর্ন করার সুযোগ পায়।
শেষ কথা
মনে রাখবেন রাইটিং স্কিল হলো ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এই হাতিয়ার থাকলে এবং Writing Skills For Career সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানা থাকলে খুব সহজেই এবং কম সময়ে ক্যারিয়ারে ভালো কিছু আশা করা যায়।
নিজস্ব প্রতিভা এবং একটি নির্দিষ্ট গন্ডির সাথে নিজের পরিশ্রমকে ধীরে ধীরে অর্থবহ করে তুলুন। আপনারা এই সফল যাত্রার প্রতি রইলো প্রাণঢালা শুভ কামনা।